ট্যুরের গন্তব্য ও সময় সম্পর্কে জানা
ট্যুরে কোন জায়গায় যাবেন সেই স্থান আগে ঠিক করতে হবে। এবং সেই অনুযায়ী সেফটির ব্যবস্থা করতে হবে। ট্যুরের গন্তব্যে পৌঁছাতে কতক্ষন লাগবে সেই সম্পর্কে জানতে হবে।
যদি ঐ অঞ্চলের পরিচিত কেউ থাকলে বেশি ভালো হয়। যদি না থাকে তাহলে গুগলের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে নেওয়া যায়। আর এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া গেলে গুগল লোকেশন অন করে যোগাযোগ করবেন এতে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও সুবিধা হবে।
যেই স্থানেই যান না কেন যদি ঐ অঞ্চলের পরিচিত কেউ থাকে তাহলে সেই অঞ্চলের হোটেল ব্যবস্থা, পরিবেশ ও কোন ঋতুতে কেমন থাকে ঐ অঞ্চল সেই সম্পর্কে আগাম ধারণা রাখতে পারবেন।
এছাড়া একেক অঞ্চলের সৌন্দর্য একেক সময় অধিক উপভোগ্য হয়। যেমন-আমার একটা বাজে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলি তাহলে বুঝতে পারবেন বিষয়টি, চট্টগ্রাম তো আমাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যেখানে বঙ্গোপসাগর রয়েছে, গরমে ঐ অঞ্চলে ট্যুরে গেলে নিশ্চিত আপনার ট্যুর বৃথা যাবে আরও তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন।
কেননা ঐ অঞ্চলে এমনিতেই গরম বেশি কারণ ঐখানে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে আর যদি হয় গ্রীষ্মকাল তাইলে তো কথাই নেই। এমনকি ঐ সময় ঘূর্ণিঝড়ের ও আশঙ্কা থাকে।
তাই কোন অঞ্চলে ট্যুরে যাবেন সেই অঞ্চল সম্পর্কে জানতে হবে। যদি পরিচিত কেউ না থাকে তাহলে গুগল থেকে অনেকটাই জানতে পারবেন। আরও জানতে পারবেন -ঐ এলাকার বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে।
বাইক নির্বাচন
১২৫-১৫৫ সিসির মটর সাইকেলে আপনি ভালো একটা অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। কারণ আমাদের দেশের আয়তন অনেক কম। তাই এই রেঞ্জের মটর সাইকেলেই ভালো অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। যদি বাইক টিউবলেস না হয় তাহলে এক্সট্রা টিউব সাথে রাখতে পারেন।
বংশাল থেকে পাম্পার ও কিছু সেফটি টুলস সাথে রাখতে পারেন। কেননা রাস্তায় কোন জরুরী প্রয়োজনে এগুলো কাজে লাগতে পারে।
ফার্স্ট এইড বক্স
রাস্তায় হঠাৎ কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে যাতে সাথে সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া যায় অনেক সময় তা একজন ব্যক্তির জীবন পর্যন্ত রক্ষা করতে পারে। এছাড়া অসুস্থতা তো বলে কয়ে আসে না, এছাড়া অনেকক্ষণ বাইক রাইডিং করলে শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
তাই সাথে কিছু ওষুধ রাখতে পারেন যেমন -এসিডিটির জন্য ট্যাবলেট, পেটব্যথার ওষুধ, অনেকের আবার জার্নিতে বমির ভাব বা বমি হয়। সেই জন্য ওষুধ রাখতে হবে, স্যালাইন বা গ্লুকোজের বোতল সাথে রাখতে হবে।
এছাড়া ব্যান্ডেজ , অ্যান্টিসেপটিক স্প্রে, পেইন কিলার। এর বেশি কিছু রাখতে হবে না। কেননা সেফটি আগে। কেননা এই সেফটি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা ঘটে যা শুধু আমাদের কেই না আমাদের পরিবার কেউ শেষ করে দেয়।
তাই সব দিক বিবেচনা করে ও পরিবার পরিজনদের কথা মাথায় রেখে সাবধানে বাইক রাইডিং করতে হবে।
ট্যুরের প্রকারভেদ
ট্যুর সাধারণত তিন ধরনের হয়। যেমন-
- পার্সোনাল ট্যুর
- শর্ট ট্যুর
- লং ট্যুর
পার্সোনাল ট্যুর:
এই ধরনের ট্যুরে ব্যক্তি শুধু নিজেই ট্যুর করে। এই ট্যুরে নিজের ইচ্ছে মত সব করা যায়। কিন্তু অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কোনো জনমানবশূন্য স্থানে বাইক থামানো যাবে না। এতে আপনি অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। যেমন- ডাকাতি, ছিনতাই হতে পারে।
এই ধরনের ট্যুরে রাতে যাওয়া ঠিক হবে না কেননা কোন বিপদ হলে কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না। এই ট্যুরে অবশ্যই সবসময় গুগল লোকেশন অন রাখতে হবে।
শর্ট ট্যুর:
এই ট্যুরে সাধারণত বন্ধু -বান্ধবদের সাথে যাওয়া হয়। এই ট্যুরে অনেক মজা হয়। কেননা সম্পূর্ণ জার্নিতে আনন্দ উপভোগ করা যায়। একলা না হওয়ায় বিরক্তি তেমন একটা কাজ করে না। এই ট্যুরে দিন গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায়।
তবে অবশ্যই জার্নির সময় সামনে ও পিছনে দুইজন দক্ষ বাইকারকে রাখতে হবে। তারা যাতে পুরো জার্নিটা মেইনটেইন করতে পারে। অবশ্যই সামনের বাইকারকে দিনের বেলাতেও বাইকের হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখতে হবে।
যাতে সামনের যানবাহনের চালকেরা বুঝতে পারে তোমরা একটা দল ধরে আছো। পেছনের বাইকারকেউ বাইকের হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখতে হবে যাতে মাঝখানের সবাই মিররের লাইট দেখে বুঝতে পারে সবকিছু ঠিক আছে।
এই ট্যুরে অনেকেই অল্প দূরত্বের জন্য হেলমেট পরতে চায় না। কিন্তু এতে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই হেলমেট অবশ্যই পড়বেন।
লং ট্যুর :
এই ট্যুরের সময়কাল সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন বা তার বেশিও হতে পারে । এই ট্যুরেও বন্ধু -বান্ধবদের সাথে যাওয়া হয়। তবে সময় বেশি হওয়ায় কোমর,পিঠ, হাতের কব্জি, ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
তাই জার্নির একঘন্টা পর পর বিশ্রাম নিতে পারেন। বেশি ভালো হয় কিছুটা ব্যায়াম করে নিলে। এই ট্যুরেও শর্ট ট্যুর এর নিয়ম অনুযায়ী সেফটির ব্যবস্থা করতে হবে।
এই ট্যুরে যাওয়ার আগে হোটেলের ব্যবস্থা আগেই করতে হবে। যদি পারেন যাওয়ার আগেই বুকিং দিয়ে যেতে পারেন। কেননা পরে ঐখানে যাওয়ার পর বিশ্রাম হোটেলের ব্যবস্থা করতে না পারলে সম্পূর্ণ জার্নিটাই মাটি হয়ে যাবে।
অনেক সময় দেখা যায়, থাকার জায়গার ব্যবস্থা না করতে পারায় ফিরে আসতেও হতে পারে। এটা নিশ্চয়ই আপনি আশা করবেন না।
আর ট্যুর যদি হয় পাহাড়ি রাস্তায় তাহলে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সবসময় বাম সাইড দিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। কেননা পাহাড়ি রাস্তায় শুধু বাঁক আর বাঁক। এখানে তাই আপনাকে আরও সাবধানে বাইক রাইডিং করতে হবে।
ফিরে আসার সময় বাইকের স্পিডের উপর খেয়াল রাখতে হবে। কেননা পাহাড়ি রাস্তায় নামার সময় বাইক আপনা আপনি একটা স্পিড পাবে । তবে অনেকেই বাইকের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। যা একদমই ঠিক না।
এতে স্পিড নিজের কন্ট্রোলে থাকে না। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আরো একটি বিষয় হলো সাথে অবশ্যই কিছু খাবার রাখতে হবে যেমন- চকোলেট বা স্ন্যাকস জাতীয় কিছু। যাতে ক্ষুধা লাগলে কিছুটা তা নিবারণ করা যায়।
অবশ্যই কাউকে অভারটেক করার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। এতে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এভাবে বাইক রাইডিং করলে ইনশাল্লাহ আপনার বাইক রাইডিং আনন্দের ও স্মরণীয় হবে।
Tags: ছুটিতে যাবার আগে,ছুটিতে যাবার আগে মনে রাখুন এই ১৫টি টিপস,গর্ভবতী অবস্থায় ভ্রমণ,বেড়াতে যাবার আগে,ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে,গর্ভবতী মায়ের চলাফেরা,গর্ভাবস্থায় বিমান ভ্রমণ,ট্রাভেল টিপস ভ্রমণে আপনার প্রস্তুতি,ভ্রমণে যাওয়ার সময় যা যা সঙ্গে নিবেন এবং যা যা করবেন,লাইফস্টাইল,ভ্রমণে যাচ্ছেন,সবকিছু প্রস্তুত তো,ভ্রমণে যাওয়ার প্রস্তুতি,এই জিনিসগুলো নিতে ভুলবেন না,ভ্রমনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস,bangla lifestyle tips,tips ghor,tips,bangla tips
https://www.incometips.xyz/feeds/posts/default